দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে জামিন দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ড. হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে লিভ টু আপিলের শুনানি শেষে সেলিমকে জামিন দেওয়া হয়। বেঞ্চের অন্য চার বিচারপতি হলেন-বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহানউদ্দিন ও বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
আবেদনের শুনানিকালে সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা হাজী মো. সেলিমের পক্ষে ছিলেন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে হাজী সেলিমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা সাংবাদিকদের জানান, আপিল নিষ্পত্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ জামিন দিয়েছেন। এই বছরের শুরুতে, হাইকোর্ট তার দোষী সাব্যস্ত এবং 10 বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখে।
উল্লেখ্য, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর লালবাগ থানায় হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল বিচারিক আদালত তাকে দুটি ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম হাইকোর্টে আপিল করেন। এরপর ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট তার সাজা বাতিল করেন।পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন।সে মোতাবেক শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৯ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন। ১০ বছরের সাজা বহাল থাকলেও তিন বছরের সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন হাজী সেলিম। রায়ের ৩০ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।চলতি বছরের ৯ মার্চ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। রায়ে তাকে ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।এ সময়ের মধ্যে তিনি আত্মসমর্পণ না করলে তার জামিন বাতিল ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় থাইল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করেন হাজী সেলিম। আদালতের সাজা মাথায় নিয়ে হাজী সেলিম দেশ ত্যাগ করলে বিষয়টি বিভিন্ন মহলে বিতর্কের জন্ম দেয়।এরপর ৫ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে হাজী সেলিম দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে লালবাগে তার নির্বাচনী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দার জানাজায় অংশ নেন। পরে তিনি লালবাগ থেকে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে স্ত্রীর কবর জিয়ারত করেন।
পরে হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী আত্মসমর্পণ করলে ২২ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক শহিদুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করেন। এ সময় আসামিদের আইনজীবীরা তাকে কারাগারে ডিভিশন ও সুচিকিৎসার দাবি জানান। বিচারক কারা কর্তৃপক্ষকে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। 24 মে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় সাজার বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিন। একই সঙ্গে জামিনের আবেদন করেন হাজী সেলিম।
গত ৬ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য ২৮ আগস্ট দিন ধার্য করেন। আপিল বিভাগ ১ আগস্ট জামিন আবেদন নথিভুক্ত করার পর লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আপিল) শুনানির জন্য ২৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। কিন্তু আবেদনটি কার্যতালিকায় তলানিতে থাকায় আর শুনানি হয়নি।
.jpg)
0 মন্তব্যসমূহ