অনলাইন ডেস্ক :
একজন ইউপি চেয়ারম্যান ফেনীর সোনাগাজীতে তালিকাভুক্ত ২০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে পুনর্বাসন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনেন। চেয়ারম্যানের নাম মোশাররফ হোসেন বাদল। তিনি দ্বিতীয়বারের মতো সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি মঙ্গলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইউনিয়নের তালিকাভুক্ত ২০ মাদক ব্যবসায়ীকে মাদক ব্যবসা থেকে প্রত্যাহার করার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন তিনি। মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের পরিবারের কথা ভেবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চেয়ারম্যানের সহযোগিতা চান। তারা চেয়ারম্যানের সাথে মাদক সেবন ও ব্যবসা না করার প্রতিশ্রুতি দিলে তিনি তাদের আর্থিক সহায়তা করেন এবং কয়েক মাস ধরে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন।
স্থানীয়রা জানান, মাদক ব্যবসায়ীরা সামাজিকভাবে বিদ্বেষ ও বয়কট করে। তাই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ঘোষণায় স্থানীয় সমাজ, স্কুল, মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির সদস্যদের সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাদল। মাদক ব্যবসায়ীদের কথায় আশ্বস্ত হয়ে স্থানীয় লোকজনও তাদের সাহায্য করতে থাকে। পুনর্বাসিতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন একাধিক কন্যাকে বিয়ে করেছেন।
একাধিক মামলায় জেল খেটেও তারা সেই ব্যবসা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।
ফেনী জেলার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে মঙ্গলবার বিকেলে মঙ্গলকান্দি ইউপি কার্যালয়ে মাদক বিরোধী জনসচেতনতামূলক শপথ গ্রহণ ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। মঙ্গলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ফেনী জেলার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সোনাগাজী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম অনিক চৌধুরী, সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দায়ান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই অজয় কুমার সাহা, ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম মিরন, মাস্টার কামাল উদ্দিন প্রমুখ। মমিনুল হক ও ভুলু মিয়া তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
ইউপি সদস্যরা পুনর্বাসিতদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। পুনর্বাসিত ব্যক্তিরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ফেনী জেলার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফের কাছে শপথ পাঠ করান যে তারা ভবিষ্যতে মাদক ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িত হবে না।
মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা কয়েকজন তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী হিসেবে তারা পরিবার, সমাজ ও প্রশাসনের কাছে ঘৃণার পাত্র। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পেরে আমরা খুশি। তাদের সহযোগিতা করায় চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা।
চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাদল জানান, ওই ইউনিয়নে মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন। মাদক ব্যবসায়ীদের বারবার পুলিশে সোপর্দ করার পরও তারা ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছে না। পরে তিনি তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন। তিনি আরও বলেন, চুরি-ডাকাতিসহ সব অপরাধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মাদক। মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নকে মাদক মুক্ত রাখতে পারলেই এ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।
.png)
0 মন্তব্যসমূহ